হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, হুজ্জাতুল ইসলাম মুসাভি হসাব বলেন, ‘জিহাদে তাবইন’ বা সত্য ও আদর্শ ব্যাখ্যার দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বিপ্লবী হাওযার অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হলো—ইমাম খোমেনি (রহ.)-এর চিন্তাধারা ও বুদ্ধিবৃত্তিক কাঠামোর বৈশিষ্ট্যসমূহকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া ও ব্যাখ্যা করা। তিনি বলেন, ইমাম খোমেনি (রহ.) ইসলামি বিপ্লব ও শাসনব্যবস্থার স্থপতি হিসেবে ইসলামী শিক্ষা, কোরআন ও আহলে বাইতের (আ.) চিন্তা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে যে মহান ও ঐতিহাসিক কাজটি সম্পন্ন করেছেন, তা হলো—একটি ‘তাগুতি (অধর্মীয়-দমনমূলক) শাসনব্যবস্থাকে জনগণের শাসনে’ রূপান্তরিত করা। এটাই ছিল ইসলামি বিপ্লবের সবচেয়ে মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ কৃতিত্ব, যেটি সর্বোচ্চ নেতা (আইয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী) নিজেও স্পষ্ট করে বলেছেন।
ইমাম রুহুল্লাহ (রহ.)-এর বাণী ও জীবনাচারে অস্টাকবার বিরোধিতা
তিনি আরও বলেন, অন্যদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে যে অস্টাকবার বা পরাশক্তি বিরোধিতা ছিল ইমাম খোমেনি (রহ.)-এর চিন্তার একটি কেন্দ্রীয় ও মৌলিক স্তম্ভ। তাঁর আধ্যাত্মিক-রাজনৈতিক ওসিয়াতনামায় (উইলে) এই বিষয়ের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি সেখানে বলেন:
“আমার ওসিয়ত হলো—হে বিশ্বের মুসলমান ও নিপীড়িতরা, তোমরা বসে থাকো না এই আশায় যে, তোমাদের দেশের শাসক বা কোনো বিদেশি শক্তি তোমাদের স্বাধীনতা ও মুক্তি উপহার দিয়ে যাবে... হে বিশ্বের নিপীড়িতরা, হে মুসলিম দেশ ও জাতি—তোমরা জেগে ওঠো, এবং নিজের অধিকার নিজেরাই ছিনিয়ে নাও; পরাশক্তিদের প্রচারযন্ত্র ও তাদের গোলামদের ভয় কোরো না।”
ইমাম শুধু পরাশক্তি ও তাদের ভয়ভীতি থেকে ভয় না পেতে আহ্বান জানাননি, বরং স্বয়ং নিজের জীবনেও এই সংগ্রামকে বাস্তব রূপ দিয়েছেন। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন:
“যদি আমি, খোমেনি, একা-একা থেকেও পড়ে যাই, তবুও আল্লাহর পথে চলব—এটাই কাফেরতা, জুলুম ও শিরক বিরোধিতার পথ।”
এই হাওযাভিত্তিক গবেষক আরও বলেন: সমসাময়িক ইতিহাসে এমন নেতৃত্ব খুব কমই পাওয়া যায়, যিনি শুধু নিজের জাতির ভাগ্যই নয়, বরং বিশ্বব্যাপী চিন্তা, রাজনীতি ও প্রতিরোধের গতিপথকে পরিবর্তন করেছেন। ইমাম খোমেনি (রহ.) ছিলেন এর জীবন্ত উদাহরণ। তিনি কেবল একটি নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপন করেননি, বরং এমন এক সজীব, গতিশীল ও প্রেরণাদায়ী চিন্তা দান করেন, যা বিভিন্ন জাতির জাগরণের ভিত্তি হয়ে দাঁড়ায়।
আপনার কমেন্ট